তারেক রহমান সফল রাষ্ট্রনায়কের যোগ্য উত্তরসূরী : খন্দকার মোশাররফ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একজন সফল রাষ্ট্রনায়কের যোগ্য উত্তরসূরী। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার কখনো স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়বে না। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার রাতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তারেক রহমানের জন্ম, প্রশিক্ষণ ও রাজনীতিতে আগমন সবারই জানা। তার মধ্যে রয়েছে রক্তের উত্তরাধিকার। তার বাবা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমান। তারেক রহমান স্বাধীনতার ঘোষকের উত্তরসূরী। ৭৫ সালের ৩ নভেম্বর দেশে যখন সঙ্কট দেখা দেয়, ৭ নভেম্বর আবারো জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। সেই জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরী তারেক রহমান।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের সকল ব্যর্থতা পূরণ করে সফলতায় রূপদান করেন। বাংলাদেশকে বিনির্মাণের জন্য তিনি যে নীতি-আদর্শ দিয়েছেন, আজকে যারা ক্ষমতায়, স্বাধীনতার পরও তারাই ছিল, সেটা দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ রক্ষী বাহিনী গঠন করে মানুষ হত্যা করেছে। ’৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ দিয়েছে। এমনিভাবে বাক-ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করেছে। সংবাদপত্র বন্ধ ও স্বাধীনতা নষ্ট করেছে। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করেছেন জিয়াউর রহমান। আমাদের জাতীয় যে নীতিগুলো ছিলো সেগুলোকে সময়োপযোগী ও বাস্তবায়ন করেছেন। আজকে বর্তমান বাংলাদেশ বিনির্মাণের পেছনে সকল কাজে ছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান। যিনি সফল রাষ্ট্রনায়ক। যার মৃত্যুর পর এতবড় জানাজা মুসলিম বিশ্বে হয়নি। সেই সফল রাষ্ট্রনায়কের উত্তরসূরী তারেক রহমান। জিয়ার শাহাদাতের পর দেশে গণতন্ত্রের পতাকা তুলে ধরেছেন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তারই উত্তরসূরী তারেক রহমান। শহীদ জিয়ার আদর্শ দেশের মানুষের হৃদয়ে প্রোথিত। ফলে শত জুলুম-নিপীড়নেও বিএনপিকে দমানো যাবে না। তারেক রহমান শুধু রক্ত নয়, আদর্শেরও উত্তরসূরী।

তিনি বলেন, আজ তারেক রহমান কেন দেশের বাইরে? খালেদা জিয়া কেন কারাগারে? শহীদ জিয়া কেন অকালে আততায়ীর হাতে শহীদ হলেন? বিএনপির ওপর কেন হামলা-মামলা, গুম? এসব কিন্তু একই সূত্রে গাঁথা। কারণ শহীদ জিয়া বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে আধুনিক স্বনির্ভর বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি মানুষকে বুঝিয়েছিলেন আমাদের কোনো শত্রু নেই। সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এ কারণে জিয়াউর রহমানকে শহীদ করা হলো। অনেকেই ভেবেছিল তাকে হত্যা করে জাতীয়তাবাদী শক্তি শেষ হবে। কিন্তু সেটি ভুল প্রমাণিত করেছেন খালেদা জিয়া। আজকে সেকারণে খালেদা জিয়াও টার্গেট। তাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দিয়ে কারাবন্দী করা হয়েছে। আজকে তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। কারণ সে শহীদ জিয়া ও বেগম জিয়ার উত্তরসূরী এবং আমাদের দলের নির্বাচিত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। তার ওপরও চলছে নির্যাতন। আজকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম ও গণঅভ্যুত্থানের বিকল্প নেই। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার বিএনপিকে দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ সরকার স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়বে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জেডআরএফ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী সংগঠন, যা শহীদ জিয়ার স্বপ্ন ও আদর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। শহীদ জিয়ার আদর্শের ধারক ও বাহক তারেক রহমান। যিনি পিতার মতো স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান ও বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। তিনি দেশ থেকে নেয়ার জন্য নয় দেয়ার জন্য রাজনীতি করেন। আজকে গণতন্ত্রেও জন্য বাংলাদেশে তার উপস্থিতি একান্ত কাম্য। তার জন্য দেশের কোটি কোটি হাত আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। যারা ভিন্ন মত সহ্য করতে পারে না তাদের ভ্যাকসিন হলো তারেক রহমান। করোনা আওয়ামী লীগের জন্যও ভ্যাকসিন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা: ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, তারেক রহমান রাজনীতিতে উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রক্তের এবং আদর্শের উত্তরসূরী। যিনি দেশে তৃণমূলের রাজনীতি দিয়েই রাজনীতিতে পথচলা শুরু করেন। তিনি সাধারণ সদস্য হয়ে গ্রামের পর গ্রাম হেঁটে পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। তিনি আমাদের ভবিষ্যত কাণ্ডারি। যার চিন্তাভাবনা দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিয়ে।

এছাড়াও জেডআরএফের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নুর পরিচালনায় সভায় আরো অংশ নেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহম্মেদ অসীম, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, জেডআরএফের ডা: শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, অধ্যাপক ড. ফজলুল হক ভুইয়া, ডা: পারভেজ রেজা কাকন, ডা: এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা: শেখ ফরহাদ, ডা: সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, রাশিদুল হাসান, ডা: খান আনিসুল সোহাগ, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, ড. নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক নূর উদ্দিন, ডা: তোজাম্মেল হক, ড. ইকবাল, ডা: এনামুল, ড. মামুন অর রশিদ, কৃষিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান, প্রকৌশলী গোলাম রহমান রাজিব, ড. মোজাম্মেল হক, ডা: আবুল কেনান, মহিলা দলের মিসেস শামীমা রহিম, এ্যামট্যাবের বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম আকাশ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেত্রী সুলতানা জেসমিন জুঁই, ঢাবি ছাত্রদলের কানেতা ইয়া লামলাম-সহ বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত জেডআরএফের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

You might also like