৮০ দিন এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
এ উপলক্ষে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভার কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গঠিত বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিক্যাল বোর্ড সন্ধ্যা ৬টায় হাসপাতাল অডিটোরিয়ামের ১১ তলায় সংবাদ সম্মেলন করবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। এছাড়া তিনি নিজেও বাসায় ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছেন। এজন্য তাকে ছাড়পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর গুলশানের বাসভবনে খালেদা জিয়ার রক্তবমি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার লিভারসিরোসিস শনাক্ত হয়।
এদিকে খালেদা জিয়াকে বাসায় নেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বাসভবনে কর্মরত সকলের করোনা টেস্ট করা হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে বাড়ি।
খালেদা জিয়ার লিভারে রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। এছাড়া দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এ অবস্থায় তাকে বাবসভবনে রেখেই চিকিৎসার কথা ভাবা হচ্ছে। বাসায় চিকিৎসার আয়োজন রাখা হয়েছে বলেও জানান চিকিৎসকরা।
খালেদা জিয়া আড়াই মাস ধরে রয়েছেন হাসাপাতালে। বাসায় রাখলে আত্মীয় পরিজনের মাঝে খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানিসকভাবে আরো শক্ত হতে পারবেন বলে মনে করছেন এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এসব বিষয় বিবেচনা করেই চিকিৎসকরা তাকে বাসায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, দাঁত, চোখের সমস্যাসহ সর্বশেষ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছিলেন।
১৩ নভেম্বর তার বাসভবন ফিরোজায় রক্তবমির পরপরই তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এভারকেয়ারের চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি বিশেষ মেডিকেল টিম তার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
২৮ নভেম্বর খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ায় খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। তিনবার এই রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়া গেলেও চতুর্থবারের জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করেন তখন।
ওই সময়ে চিকিৎসকরা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা অসহায় বোধ করছেন। বাংলাদেশে এ ধরণের রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়ার কারিগরি সুযোগ নেই। চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত দেশের বাইরে নিতে হবে। তারা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুপারিশও করেন। পরিবারের পক্ষ থেকেও বারবার বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারের অনুমতি নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিলো। কিন্তু রহস্যজনকভাবে সরকার তা উপেক্ষা করছেন। এখনও সুচিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।