ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার তথ্য তুলে ধরে দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছরের শুরুতেই ৪৩ দিনে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় তারা রাজকোষ শূন্য করে ফেলেছে; দেশকে দেউলিয়া করেছে।
“রাজস্ব আহরণ কমে গেছে; রেমিট্যান্স আসা বিপুল পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। মেগা প্রজেক্টসহ তথাকথিত উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিদেশে পাচার করেছে। প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় টাকা পাচারকারী একেকজন আওয়ামী লীগ নেতার ছবি প্রকাশিত হচ্ছে।”
ফরিদপুরের ছাত্র লীগ নেতার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী নেতাদের টাকা পাচারের কাহিনী আরব্য উপন্যাসকেও হার মানায়। জেলা পর্যায়ের ছাত্র নেতারা যদি হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচারের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে জাতীয় পর্যায়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর লোকেরা কতো টাকার সমুদ্রে ভাসছেন সেটা এখন জানার বাকি। জনগণের অর্থকে কীভাবে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী লোপাট করেছে তার নতুন নতুন লোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসছে।
ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৯ জনকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকার অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
ক্ষমতাসীনদের নানা অপকর্ম আড়াল করতে সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় খালেদা জিয়া- তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এই বক্তব্যে জবাবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “তাহলে আমিও বলি, ২০০৯ সালে পিলখানা বিডিআর সদর দপ্তরের হত্যাকাণ্ডের দায়ও বর্তায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর। কারণ তিনি সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন।
রিজভী বলেন, “এই সরকারের আমলে শুরু থেকেই বাংলাদেশের সর্বত্র রক্তগঙ্গা বয়ে যাচ্ছে। সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে বাংলাদেশের বর্তমান ছবিটা যেন শুধুই গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের। মানবিক বাংলাদেশের সেই চিরচেনা ছবিটা মুছে দিয়েছে বর্তমান সরকার।
“সারা দেশকে চুষে নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার এখন বিএনপিসহ বিরোধী দলকে চিরস্থায়ীভাবে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অমানবিক মাস্টারপ্লান বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে।”
নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন হয়।