স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেটে মন্ত্রী, পিএস ও মন্ত্রী পুত্র!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে সবচেয়ে সমালেচিত হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এন-৯৫ মাস্ক ক্রয়সহ নানা দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার চিত্র ধরা পড়ে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট প্রদান। এসবের পেছনে শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে বলে দাবি করা হয়।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম সময়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ডা. আ ফ ম রুহুল হকও এই সিন্ডিকেটের কথা বলেছিলেন। তিনি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েও সফল হতে পারেননি। এমনকি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এমন খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নথিতে দেখা গেছে, গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই সিন্ডিকেট কাজ করছে। যার মূল নেতৃত্বে রয়েছেন মিঠু নামের একজন। তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে থাকেন। আর সেখান থেকেই এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। এই সিন্ডিকেটে সাবেক মন্ত্রী, একজন বর্তমান মন্ত্রী, তার পিএস ও তার ছেলে যুক্ত রয়েছেন বলেও ওই নথিতে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও একজন অতিরিক্ত সচিবেরও নাম রয়েছে। বর্তমান মন্ত্রী, তার পিএস এবং মন্ত্রীর ছেলে বর্তমানে নানা অর্ডার ও কেনাকাটায় প্রভাব খাটান বলেও নথিতে উল্লেখ করা হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা এই সিডিকেটগুলো খুবই প্রভাবশালী। এরা বিএনপি সরকারে আমলেও ছিলো। সরকার পরিবর্তন হলেও এই সিন্ডিকেটের কোনো পরিবর্তন হয় না।

ডা. আ ফ ম রুহুল হক জানান, তিনি চেষ্টা করেও এই সিন্ডকেট ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখানে মন্ত্রীদেরও করার কিছু থাকে না। মন্ত্রণালয়ের লোকজনও জড়িত এসব কাজে জড়িত থাকে। মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বাইরের প্রভাবশালীরা এই সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। আর এজন্যই নিয়ম না মেনে রিজেন্ট হাসপাতাল ও জিকেজি হেলথ কেয়ার চুক্তি করতে পেরেছে।

সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি যখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তখন এই সিন্ডিকেট নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত জানাই এবং এ সংক্রান্ত সকল তথ্য দেই। আমি এই সিন্ডিকেটর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা ও বাইরের সদস্যদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী সেগুলো দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছিলেন। আমি নিজে কাগজপত্রগুলো এজেন্সিকে দেই। এরপর কী হয়েছে এখন মনে করতে পারছি না।’ তবে এই মিঠু সিন্ডিকেট বিএনপির আমলে ছিলো, এখনো আছে বলেও ধারণা করেন তিনি।

বাংলা/এনএস

আরো পড়ুন