জানুয়ারিতে ফিরছেন তারেক রহমান

আগামী জানুয়ারিতে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দিনতারিখ চূড়ান্ত না হলেও নতুন বছরের শুরুতেই তাঁর দেশে ফেরার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলের শীর্ষনেতার   দেশে ফেরা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় এদিন দল ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে বিশাল শোডাউনের আয়োজন করা হবে। সারা দেশ থেকে আসা মানুষের ঢল নামবে মহানগরীতে। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে বাসভবন পর্যন্ত লাখো নেতা-কর্মী ও সমর্থক স্বাগত জানাবেন তাদের এ প্রিয় নেতাকে। সেদিন রাজধানীতে ‘মহাসমাবেশ’ আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রায় ১৭ বছর বিদেশে অবস্থানের পর দেশে ফিরে সেই মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন তারেক রহমান। দলের একাধিক নির্ভরযোগ্যসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলের পর যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল ও মাঠ পর্যায়ের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থক। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে ফেরার পথ উন্মুক্ত থাকলেও ফেরেননি দলের এ কান্ডারি। এরই মধ্যে মুক্ত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একের পর এক রাজনৈতিক মামলা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। সর্বশেষ গতকাল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকে খালাস পেলেন তিনি। এ মামলায় বিচারিক (নিম্ন) আদালতের রায়ে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদে র রায় দেওয়া হয়েছিল। বাকি রাজনৈতিক মামলাগুলো থেকেও আগামী এক মাসের মধ্যে তিনি মুক্ত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। দলের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দেশে থেকেই দল ও জোটের নেতৃত্ব দেবেন। এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘সব মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসবেন।’ তিনি বলেন, ‘বিগত দিনগুলোয় আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। আশা করি তিনি আমাদের মাঝে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘তারেক রহমান বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচ  রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তাদের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বর্তমানে লন্ডন সফররত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে মামলাগুলোর নিষ্পত্তি ও তাঁর দেশে ফেরার বিষয়ে কথা বলবেন। ফলে তিনি দ্রুতই দেশে ফিরবেন বলে আশা করছি।’ স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘শিগগিরই দেশে ফিরে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য তারেক রহমান বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন। সমগ্র বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে তাঁর আগমনের অপেক্ষায়।’

আরও চার মামলায় তারেক রহমানের সাজা বহাল : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল খালাস পেলেন বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়। বর্তমানে অর্থ পাচার, দুর্নীতি, মানহানিসহ আরও চার মামলায় তাঁর সাজা বহাল রয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মতো বাকি মামলাগুলোতেও তারেক রহমান ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা করছেন তাঁর আইনজীবী।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেই থেকে তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। ২০০৭ সাল থেকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পর্যন্ত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অন্তত ৮৪টি মামলায় হয়। এর মধ্যে পাঁচটিতে সাজা হয় তাঁর। আর খারিজ, খালাস ও অব্যাহতি পেয়েছেন ৩৯ মামলায়।

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারেক রহমান আরও মিথ্যা, সাজানো চার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। আজ (গতকাল) যেভাবে ন্যায়বিচার পেয়েছেন বাকি চার মামলায়ও আশা করছি ন্যায়বিচার পাবেন।’ তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০-৬৫টি মানহানির। ইতোমধ্যে ৩৯টি মামলায় খালাস, খারিজ ও চার্জশিট থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

You might also like