টেলিভিশনে ‘সাহেদ-শো’, সঙ্গীরাও আলোচনায়

“হয়ত ক্যাসিনো দিয়ে শুরু হয়েছে, এটার এন্ডিং কোন পর্যন্ত যাবে, ইউ নেভার নো। সব নাম আসতেছে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আপনি যতই সরকারের ঘনিষ্ঠ হন না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

প্রতারণার অভিযোগে মোহাম্মদ সাহেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর একটি ভিডিও ক্লিপে (গত বছরের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময়কার) তার এই বক্তব্য সোশাল মিডিয়ায় অনেকের নজর কাড়ে, হাস্যরসের খোরাকও হয়ে ওঠে এটি।

ভিডিওটি ছিল একটি টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানের, গত ৭-৮ বছর ধরে বিভিন্ন টেলিভিশনে এমন অনেক অনুষ্ঠানে দেখা যেত সাহেদকে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এসব টক শোতে উপস্থিত হয়ে নানা নীতি কথা শোনাতেন সাহেদ, মানুষের জন্য নিজের ‘ত্যাগের’ কথাও বলতেন। কখনও অনুষ্ঠান উপস্থাপকের চেয়ারেও বিশাল বপু নিয়ে বসতে দেখা গেছে সাহেদকে।

‘রাজনৈতিক বিশ্লেষক’ হিসেবে ওইসব টকশোতে গিয়ে রাজনীতি থেকে সমাজনীতি, অর্থনীতি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে মহাকাশ বিজ্ঞান- প্রায় সব বিষয়ে অল্প-বিস্তর মতামত দিতে দেখা গেছে তাকে।

আর ওই সব টক শোতে যুক্ত গণমাধ্যমকর্মীদের কাউকে কাউকে তখন সাহেদের প্রশস্তি গাইতেও দেখা গিয়েছিল।

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মিডিয়া অঙ্গনের অনেকের সঙ্গে তার ছবি ঘুরপাক খাচ্ছে সোশাল মিডিয়ায়। কোনো ছবির ক্যাপশনে ’সখ্যের’ ইঙ্গিতও রয়েছে।

এমএএলএম কোম্পানি খুলে প্রতারণার পর তা আড়ালে রিজেন্ট গ্রুপ খুলে বসে জমিয়ে বসা সাহেদের সঙ্গে যাদের ছবি এখন সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে, সেই টকশো উপস্থাপক ও গণমাধ্যম ব্যবস্থাপকরা এখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলছেন, আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য পরিচয়ে তাকে অতিথি করা হয়েছিল এবং সে সূত্রে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ।

জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রায় মোহাম্মদ সাহেদকে দেখা যায় ২০১৫ সাল থেকেজিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রায় মোহাম্মদ সাহেদকে দেখা যায় ২০১৫ সাল থেকেকোন পরিচয়ে সাহেদকে টকশোতে আমন্ত্রণ জানানো হত, জানতে চাইলে চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, “(আওয়ামী লীগের) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উপকমিটির সদস্য হিসাবে আনা হত।”

যদিও ২০১৭ সালে ওই পদ পাওয়ার আগে থেকে জিল্লুরের এই অনুষ্ঠান মাতাতে দেখা গেছে সাহেদকে।

অন্তত ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রায় সাহেদকে দেখা গেছে। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন ক্লিপগুলোর বড় অংশও তৃতীয় মাত্রা থেকে নেওয়া।

পদ পাওয়ার আগের সময়গুলোকে সাহেদকে কোন পরিচয়ে আনা হত- জানতে চাইলে রেগে যান জিল্লুর।

তিনি বলেন, “উনি আমার এখানে এসেছেন ২০১৫ সালে বুঝলাম। উনি কত সাল থেকে টকশো করতেন জানেন? ২০১০ সাল থেকে।

“অনেক জায়গায় টকশোতে গিয়েছেন, তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন আগে, তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করবেন।”

তৃতীয় মাত্রার ওয়েবসাইট ও ফেইসবুক পাতা ঘেঁটে দেখা যায়, এই সময়ে অন্তত ২১টি পর্বে অতিথি হয়ে আলোচনায় যোগ দিয়েছেন সাহেদ। সর্বশেষ গত ১ মে তৃতীয় মাত্রার টকশোতে হাজির ছিলেন তিনি।

আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে সাহেদকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে জিল্লুর বলেন, “আমাকে এ প্রশ্ন করার আগে প্রশ্ন করেন সে কীভাবে গণভবনে গিয়েছে, কীভাবে বঙ্গভবনে গিয়েছে- সেই প্রশ্নটা আগে করেন।”

প্রতারণার মাধ্যমে বেড়ে ওঠার পথে নানা সময়ে সাহেদ সাংবাদিকদের একটি অংশের ‘সহযোগিতা’ পেয়েছেন বলে অভিযোগ আসছে এখন। সাংবাদিকরাই কেউ কেউ এ বিষয়ে ফেইসবুকে কথা বলতে শুরু করেছেন।

সাংবাদিক আনিস আলমগীর লিখেছেন, “এবার খুঁজুন, করোনা কেলেংকারিতে জড়িত রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ-এর মিডিয়া প্রমোটর কারা। রাজনৈতিক আশ্রয়দাতা কারা।”

সাংবাদিক গাজী নাসিরউদ্দিন আহমেদ লিখেছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম ব্যবস্থাপকদের অনেকের একাডেমিক ও ক্যারিয়ার প্রোফাইল দেখলে সাহেদের সঙ্গে তাদের ছবি ‘বেমানান মনে হবে না’।

অন্য অনেক ভুয়া পরিচয়ের পাশাপাশি টকশোর পরিচিতিকে পুঁজি করেও সাহেদ বিভিন্ন প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

২০১৫ সাল থেকেই একুশে টেলিভিশন ও গাজী টেলিভিশনে (জিটিভি) উপস্থাপক অঞ্জন রায়ের টকশোতে দেখা গেছে সাহেদকে। অঞ্জন রায়ের সঙ্গে সাহেদের বিভিন্ন সময়ের কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সাহেদের অপরাধের সঙ্গে সাংবাদিক অঞ্জন রায়ের ‘সম্পৃক্ততা’ আছে কি না, ফেইসবুকে সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে অঞ্জন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরা ছবি, অনেকের ব্যক্তিগত ছবি আমরা দেখেছি। তার মানে এই না, সবার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল।

“আমার ক্ষেত্রে বলতে পারি, আর পাঁচজন অতিথির (টক শোতে) সঙ্গে যে সম্পর্ক তৈরি হয়, তার (সাহেদ) সঙ্গে এর বেশি কিছু ছিল না।”

একটি আড্ডায় একসঙ্গে ছবি থাকার বিষয়ে অঞ্জন বলেন, ওই আড্ডায় সাহেদ এসে পড়েছিলেন ‘হঠাৎ করে’।

“মুগ্ধ করার জন্য যে ব্যবহার দরকার হয়, তা তার (সাহেদ) মধ্যে আছে। আমরা তো বুঝিনি এভাবে আমাদের ছবি ব্যবহার হতে পারে।”

সাহেদের সঙ্গে আড্ডায় সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও অঞ্জন রায়সাহেদের সঙ্গে আড্ডায় সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও অঞ্জন রায়অঞ্জন রায়ের ফেইসবুক পোস্ট ধরে একজনের মন্তব্যঅঞ্জন রায়ের ফেইসবুক পোস্ট ধরে একজনের মন্তব্য

অনেকবার টকশোতে আনা হলেও সাহেদ সম্পর্কে না জানতে পারাকে নিজের ‘অমার্জনীয় অজ্ঞতা’ বলে এখন মনে করছেন অঞ্জন রায়।

সাহেদকে টকশোতে এনে তার পরিচিতি বাড়িয়ে অন্যায় সুবিধা নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলেও এখন অভিযোগ আসছে ফেইসবুকে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে অঞ্জন রায় বলেন, “ধুরন্ধর লোক যদি হয়, তার পক্ষে যে কোনো পরিচয় ব্যবহার করে সুবিধা নেওয়া সম্ভব। সেটা সে দেখিয়েছে। একেক জায়গায় একেক পরিচয় দিয়েছে।

”এটা আমাদের শিক্ষা দিল- টকশোর অতিথি হিসাবে কাকে আনা হবে, সে বিষয়ে রিথিংক করা দরকার। যারা আসবে তাদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়ার কাজটি আগে করতে হবে।”

সাহেদের সঙ্গে একাধিক ছবিতে দেখা গেছে, জিটিভি ও সারাবাংলা ডটনেটের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা এবং ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহাকে।

এছাড়া ২০১৮ সালের বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ছবিতেও এই দুজন একসঙ্গে সাহেদের পাশে ছিলেন।

এদিকে, ২০১৮ সালের ৭ মার্চ টেলিভিশন স্টেশন প্রতিষ্ঠা নিয়ে সাহেদের একটি ফেইসবুক পোস্টের সঙ্গেও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন অনেকে।

ওই পোস্টে সাহেদ লিখেছিলেন, “অবশেষে একটি টেলিভিশন চ্যানেল করার সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলাম। দোয়া করবেন। এবং ধন্যবাদ রেজা ভাইকে সিদ্ধান্তটা নিতে সহজ করার জন্য।”

টেলিভিশন স্টেশন করা নিয়ে সাহেদের সেই ফেইসবুক পোস্টটেলিভিশন স্টেশন করা নিয়ে সাহেদের সেই ফেইসবুক পোস্ট২০১৮ সালের বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সাহেদের সঙ্গে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও প্রণব সাহা২০১৮ সালের বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সাহেদের সঙ্গে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও প্রণব সাহা

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ইশতিয়াক রেজা বলেন, “ওটা যে আমি, এটা ভাবার কোনো কারণ নাই। এটা আরেকজন রেজা হতে পারে। … এমনকি, আমি যদি কাউকে পরামর্শ দিয়েও থাকি যে- টেলিভিশন খোলেন, অন্যায় তো কিছু নাই।”

সাহেদের ঘটনা আগে প্রকাশ না হওয়ায় মিডিয়ার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা যে অনেক ক্ষেত্রে চেক করি না, আমরা যে অনেক সময় গ্রহণ করে ফেলি, এবারে এটার মাধ্যমে তা প্রকাশ হল।

“সমাজে বা রাজনীতিতে উঠতে দেখলে সখ্যতা করে ফেলি কিংবা আমরা হয়ত আশ্রয় দিই বা প্রশ্রয় দিই। এটাকে আমি বলব, মিডিয়ার প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা।”

তবে সাহেদের সঙ্গে ছবি তোলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি সাংবাদিক ইশতিয়াক রেজা।

সাহেদের সঙ্গে সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুলের কয়েকটি ছবিও এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ২০১৮ সালে বঙ্গভবনের একটি অনুষ্ঠানে সাহেদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি আছে তার।

এরকম তিনটি ছবির ব্যাখ্যা দিয়ে এই সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা বলেন, “একটা ছবি বিএফইউজের নির্বাচনে আমি তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হওয়ার পর আমাকে মিষ্টি খাইয়ে দিচ্ছিল। নির্বাচনের পর অনেকে মিষ্টি খাইয়েছে, তার মধ্যে আলাদা করে কাউকে দেখে রাখিনি।

“আরেকটি টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে… সেদিন তো অনেকে গিয়েছে, কেউ আলাদা করে যায়নি।

“বঙ্গভবনে ছবিতে আমার সঙ্গে আছে। বঙ্গভবনে অনেকে ছিল। রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে ক্লিয়ারেন্স নিয়েই তো অতিথিরা যায়, সেখানে আলাদা করে ছবি তোলা হয়নি।”

২০১৮ সালে বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সাহেদের সঙ্গে রসিকতায় মনজুরুল আহসান বুলবুল, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ অন্যরা২০১৮ সালে বঙ্গভবনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সাহেদের সঙ্গে রসিকতায় মনজুরুল আহসান বুলবুল, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ অন্যরামনজুরুল আহসান বুলবুল বলছেন, তিনি তৃতীয়বারের মতো বিএফইউজের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর অনেকের সঙ্গেই মিষ্টিমুখ হয়েছেমনজুরুল আহসান বুলবুল বলছেন, তিনি তৃতীয়বারের মতো বিএফইউজের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর অনেকের সঙ্গেই মিষ্টিমুখ হয়েছেবুলবুল বলেন, “এসব ছবির মানে এই না যে, আমার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে। কোনো হোটেলের লবিতে ও কারও অফিসে তার সঙ্গে আমার ছবি নাই। আনুষ্ঠানিক আয়োজনের ছবির সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ের ছবি মেলানো ঠিক হবে না।”

বুলবুল বলেন, “বিস্তারিত তদন্ত হওয়া দরকার, সে টকশো বা সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচিতি ব্যবহার করে সুবিধা নিয়েছে কি-না কিংবা সাংবাদিকরা তার সঙ্গে মিলে কোনো সুবিধা নিয়েছে কি-না।”

একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদের সঙ্গে সাহেদের ছবিও ঘুরছে ফেইসবুকে।

সাহেদকে একাত্তর টিভির টকশোতে বহুবারই দেখা গেছে, রিজেন্ট হাসপাতাল কীভাবে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবা দিচ্ছে তা নিয়ে একাত্তর লাইভও করেছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মোজাম্মেল বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ছবি তুলে সেগুলোর মাধ্যমে সে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করেছিল। কিন্তু প্রতারণা করে সে বেশি দূর যেতে পারেনি। তাকে এখন ধরা পড়তে হয়েছে।”

সাহেদের সঙ্গে ছবির বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি শাবান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তার সঙ্গে আমার একটাই ছবি। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মেয়ের বিয়েতে তোলা, যেখানে আমি আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছিলাম। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলতে দাঁড়ালে উনি কখন, কীভাবে এসে দাঁড়িয়েছিলন, আমি জানি না।

“এর বাইরে তার সঙ্গে কোনো পরিচয় বা সখ্যতা আমার ছিল না। টকশোর আলোচক হিসাবে তিনি বিভিন্ন প্রোগ্রামে যেতেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর কয়েকজন সাংবাদিককে ভর্তি করানোর জন্য উনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। উনি সে সময় আমার কথা রেখেছিলেন।”

ছবিটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মেয়ের বিয়েতে তোলা বলে জানিয়েছেন শাবান মাহমুদছবিটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মেয়ের বিয়েতে তোলা বলে জানিয়েছেন শাবান মাহমুদ২০১৭ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটল পুলিশের ইফতার মাহফিলে শ্যামল দত্তের সঙ্গে সাহেদের সেলফি২০১৭ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটল পুলিশের ইফতার মাহফিলে শ্যামল দত্তের সঙ্গে সাহেদের সেলফিটকশোর পরিচয় ব্যবহার করে ফায়দা হাসিলের প্রসঙ্গে শাবান মাহমুদ বলেন, “যারা তাকে টকশোতে এনেছেন, কীভাবে এনেছেন, কোন বিবেচনায় এনেছেন তা আমার বোধগম্য নয়। কোন যোগ্যতায় ও কোন সাংগঠনিক পরিচয়ে তাকে টকশোতে আনা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা দরকার।”

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঙ্গেও কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন রিজেন্টের সাহেদ।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে শ্যামল দত্ত বলেন, “দুইটা অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে এসে ছবি তুলেছিল সে। কেউ যদি পাশে এসে ছবি তুলতে চায় আমরাতো না করতে পারি না।”

তবে এসব ছবি সাহেদ খুব চাতুর্যের সঙ্গে ব্যবহার করেছে বলে মন্তব্য করেন এই সাংবাদিক।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এটা ঠিক, মিডিয়াকে প্রতারণার একটা ইন্সট্রুমেন্ট হিসাবে ব্যবহার করেছে সে। কেবল মিডিয়াকে না, অন্য অনেক কিছুকে সে এক্ষেত্রে ব্যবহার করেছিল।”

সরকারি-বেসরকারি প্রায় সবগুলো টেলিভিশনের টকশোতে গিয়ে শুধু আলোচকই হননি সাহেদ, এক পর্যায়ে টকশো উপস্থাপকের খাতায়ও নাম লেখান তিনি।

মোহনা টেলিভিশন ও সাহেদের ইউটিউব চ্যানেল ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত মোহনা টেলিভিশনে ’দৃষ্টিকোণ’ নামক টকশোর অন্তত ১৫১টি পর্ব উপস্থাপনা করেছেন তিনি।

আরো পড়ুন