শাহেদের গডফাদার কারা?
প্রতারণার মাস্টার মো. শাহেদ ওরফে শাহেদ করিম। একে একে বেরিয়ে আসছে তার নানা কুকীর্তি । প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে এতদিন প্রতারণা চালিয়ে গেল সে। গ্রেপ্তারের পরও কীভাবে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিল দ্রুত। কাদের সহযোগিতায় এত মামলার আসামি ঘুরে বেড়িয়েছে বীরদর্পে, ছবি তুলেছে সমাজ-রাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে, ঝড় তুলেছে টকশোতে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খোঁজখবর নিচ্ছে শাহেদের মদতদাতাদের ব্যাপারে। একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ধরনের অন্তত ১৯ জনের খোঁজ পেয়েছে। তাদের মধ্যে নেতা, দূত, আমলা, মিডিয়া, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যক্তি রয়েছেন।
সূত্রগুলো বলছে, এই মদতদাতারা নানাভাবে শাহেদকে সাহায্য সহযোগিতা করে এসেছে। শাহেদও তাদের এ বিনিময় পরিশোধ করে গেছে।
দিয়েছে অর্থকড়ি, গাড়ি, বিদেশে প্রমোদ ভ্রমণের সুবিধা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শাহেদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ, তার মোবাইল ফোনের কললিস্ট, ঘটনাস্থলে যাতায়াতসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই করে ১৯ জনকে চিহ্নিত করেছে। গত ৬ই জুলাই ঢাকার উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। করোনা প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ওই হাসপাতালটি সিলিগালা করে দেয়া হয়। হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদ তখন থেকেই পলাতক ছিল। এসময়ে শাহেদ নানাভাবে চেষ্টা করেছে নিজেকে রক্ষার। যোগাযোগ করেছে প্রভাবশালীদের সঙ্গে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইলে আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
সরকারকে নিম্নমানের মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ করেছিল শাহেদ: এদিকে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, সরকারকে নিম্নমানের মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ করেছিল রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ। আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছিল। এই নামে আসলে তার কোনো পোশাক কারখানা নেই। ফেসবুক পেজ খুলে এই প্রতারণা শুরু করেছিল সে। শনিবার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান তিনি। তিনি বলেন, আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস এর কথা বলে কাজ নিয়ে শাহেদ বিভিন্ন কারখানায় সাব-কন্ট্রাক্টে মাস্ক ও পিপিই বানানোর কাজ দিতো। সেখান থেকে এসব সুরক্ষা সামগ্রী তৈরি করে সরবরাহ করতো।
তিনি জানান, শাহেদের প্রতারণার নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্ত চলছে। আরো অনেকেই প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ নিয়ে আসছেন। আবদুল বাতেন বলেন, শাহেদ কীভাবে এত টাকা-পয়সার মালিক হলো আমরা তা খতিয়ে দেখছি। আমাদের পাশাপাশি অন্য সংস্থাও তদন্ত করে দেখছে। আমরা সবকিছুই তদন্ত করছি।