সাত বছর ধরে নাদেল-আজাদ-জাহাঙ্গীরের দখলে ছিলো ব্যবসায়ীর ২০ কোটি টাকার জমি।
সিলেটের শাহপরাণ এলাকায় সিদ্দিকুর রহমান পাপলু নামের এক ব্যবসায়ীর ২০ কোটি টাকার জমি জবরদখল করে রেখেছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এক এমপি ও দুই সিসিক কাউন্সিলর। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এসব নেতারা পালিয়ে গেলে তাদের সমর্থিত দখলদাররাও এই জায়গা ছেড়ে চলে যান। ফলে ওই ব্যবসায়ী তার কোটি কোটি টাকার জায়গা ফিরে পেয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের দোসর খ্যাত একটি কুচক্রি মহল এখনো বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে একটি বিবৃতিতে বলেছেন ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান পাপলু।
তিনি বলেন- আমাকে সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করতে আলি আশরাফ মাছুম নামের একজন শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে নানা মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে। সে ২০১৭ সাল পর্যন্ত শাহপরাণ রয়েল সিটি নামক আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলো। ওই সময় তার চরম আর্থিক অনিয়মে এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে চাকরিচ্যুত করি। ওই সময় সে ক্ষুব্দ হয়ে এব্ং তার আর্থিক অনিয়ম ধামাচাপা দিতে ও আমার সম্পত্তির লোভে পড়ে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ নেতাদের শরণাপন্ন হয়। মাছুম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সাম্পাদক- সিলেট সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ ও যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন দুর্নীতিবাজ আওয়ামী নেতার দ্বারস্থ হয়। পরবর্তীতে তারা সবে মিলে শাহপরাণ থানাধীন বহর মৌজায় অবস্থিত ২০ কোটি টাকার আমার পারিবারিক জমি (খতিয়ান নং-৩৫১১, দাগ নং-৮০৮৪, মৌজা-বহর, জে,এল,নং- ৬১, খতিয়ান নং-২৭৫৮ এর দাগ নং-৮২১৫,৮২১৬,৮২১৮, খতিয়ান- ১৫০৫, দাগ নং-৮২২৯, খতিয়ান নং- ৩৫১১, দাগ নং-৮০৮৪ মোট জায়গার পরিমান- ১৯.৯১ একর) জবরদখল করে নেয়। এসময় আমি তাদের ঠেকাতে গেলে বিভিন্নভাবে একের পর এক মামলা ও হয়রানি করতে থাকে আমাকে। এমনকি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমেও হয়রানি করা হয় আমাকে। এসময় আওয়ামী লীগ নেতাদের স্পষ্ট বক্তব্য ছিলো- তাদের শাসনামলে বিএনপি নেতাকর্মীর সম্পত্তি জবরদখল করতেই হবে।
সিদ্দিকুর রহমান পাপলু আরও বলেন- আমার জায়গা দখলের পর তারা গত ৫-৬ বছরে রাতের অন্ধকারে প্রায় ৫ কোটি টাকার মাটি বিক্রি করে ফেলে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দুর্নীতিবাজ নেতাদের কারণে আমি ছিলাম কোণঠাসা, ন্যায়বিচার পাইনি সেসময়। উপরন্তু তারা আমাকে একের পর এক নানাভাবে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন করে। কিন্তু ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর নাদেল, আজাদ ও জাহাঙ্গীরসহ দখলবাজ নেতারা দেশ ছেড়ে পালালে তাদের স্থাপিত লোকজনও আমার মালিকানাধীন ভূমি থেকে পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আমি থানা পুলিশকে পুরো বিষয়টি অবগত করি এবং আমি আমার পরিবারিক জায়গার দখল বুঝে পাই।
এদিকে, দখলবাজ নেতারা পালালেও তাদের দোসর আলি আশরাফ মাছুম নামের এ লোক তাদের নির্দেশে সংবাদ সম্মেলন করে আমাকে সামাজিক হেয়-প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের সহায়তা চাচ্ছি।