‘হায়া সোফিয়া’কে ফের মসজিদ বানালো তুরস্ক
তুরস্কের ‘হায়া সোফিয়া’কে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করেছেন দেশের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েপ এরদোয়ান। বিখ্যাত এই স্থাপনাটি এতো দিন জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। দেশটির শীর্ষ আদালত এই স্থাপনাটিকে জাদুঘরে রুপান্তর করার বিষয়টিকে অবৈধ ঘোষণা করে।
১০ জুলাই, শুক্রবার আদালত এমন রায় দেয়ার এক ঘণ্টা পর এরদোয়ান এই ঘোষণা দেন। এমন খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে এদোয়ানের সতর্ক করা হয়। কারণ, এক হাজার ৫০০ বছরের পুরাতন এই স্থাপনাটি মুসলিম ও খ্রিষ্টান দুই সম্প্রদায়ের লোকের কাছেই সমানভাবে সম্মানের।
এরদোয়ান স্বাক্ষরিত ঘোষণায় বলা হয়, ‘হায়া সোফিয়া মসিজিদের ব্যবস্থাপনা… ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তরের আছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এটি নামাজের জন্য খুলে দেয়া হবে।’
এর আগে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা এই স্থাপনাটির মসজিদের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য ইউনেস্কোর কাছে প্রস্তাব করেছিল এরদোয়ান। খ্রিস্টান বাইজেন্টাইন এবং মুসলিম অটোমান সাম্রাজ্যের উভয়ই কেন্দ্রবিন্দু এই ‘হায়া সোফিয়া’। যা বর্তমানে তুরস্কের অন্যতম দর্শনীয় স্মৃতিসৌধ।
এই জাদুঘরটিকে আলোচনা ছাড়া অন্য স্থাপনায় রূপান্তর না করতে আহ্বানও জানিয়েছিল ইউনেস্কো। কিন্তু সে কথায় কান দেয়নি তুরস্ক।
প্রসঙ্গত, ৫৩৭ সালে গোল্ডেন হর্ন উপত্যকা তদারকি করতে বাইজানটাইন সম্রাট জাস্টিনিয়ান বিশালাকৃতির হায়া সোফিয়া গির্জাটি নির্মাণ করেন। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চার্চ ও ভবন বলে মনে করা হয়। এরপর ১৪৫৩ সালে বাইজানটাইন সম্রাটদের পরাজিত করে অটোমান শাসক দ্বিতীয় সুলতান মাহমুদ ইস্তানবুল শহর দখল করে নেন। আর বিজয়ী শাসক হাজিয়া সোপিয়ার অভ্যন্তরে জুমার নামাজ আদায় করেন।
এর কিছু দিনের মধ্যেই অটোমান শাসকেরা ভবনটিকে মসজিদে পরিণত করেন। তখন এতে বহিরাবরণসহ চারটি মিনার যুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৩৪ সালে ‘হায়া সোপিয়া’কে জাদুঘরে পরিণত করা হয়। ওই সময়ে কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তুরস্ক বেশ কিছুটা ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার উদ্যোগ নেয়।
বাংলা/এনএস