সংগ্রাম ডেস্ক: বিদ্যুতের ‘ভুতুড়ে’ বিলের মাধ্যমে সরকার সিরিঞ্জ দিয়ে জনগণের রক্ত টেনে নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাড়িতে বাড়িতে বহু লোক আমাদের বলছেন যেখানে বিদ্যুৎ বিল হওয়ার কথা এক হাজার থেকে ১১‘শ ১২‘শ টাকা। সেখানে ২০ হাজার ২৫ হাজার টাকা বিল আসছে। এই ভুতুড়ে বিলের জন্য গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। সরকারের এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, সরকার এদিকে তাকাচ্ছে না। তারা আবার নির্লজ্জভাবে গায়ের জোরে বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে। এখন সিরিঞ্জে করে যেমন রক্ত টান দেয়- এই সরকার জনগণের শরীরে সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত টান দিচ্ছে এই বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, সরকার সংসদে বিল উপস্থাপন করেছেন।
শনিবার সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।, নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’র উদ্যোগে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (সংশোধন) বিল সংসদে উত্থাপনের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি নবী উল্লাহ নবী, ফিউচার অব বাংলাদেশের শওকত আজিজ, সাজ্জাদুল হানিফ বক্তব্য রাখেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের টাকা দরকার। এই টাকা কোথায় যাচ্ছে জানেন? এটাও গতকাল বিভিন্ন পত্রিকায় বেরিয়েছে- পাঁচ হাজার কয়েক‘শ কোটি টাকা সুইস ব্যাংকে জমা আছে। এই টাকা কার? এই টাকা মন্ত্রীদের, এই টাকা আমলাদের, এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের লোকদের। আজকে ১১ থেকে ১২ বছর জনগণের এই টাকা আত্মসাত করে সুইস ব্যাংক ফুলে-ফেঁপে একেবারে বিশাল মহিরুহে পরিণত করেছে তারা। এখন আরো টাকা দরকার, সুইস ব্যাংকে আরো কালো টাকা পাঠাতে হবে- এই লক্ষ্য নিয়ে বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম তারা বৃদ্ধি করছে।
করোনাভাইসরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ মরছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, অক্সিমিটার নেই, চিকিৎসা নেই ঢাকার কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া। এ সব কথা হয়ত গণমাধ্যমে আসছে কিন্তু সব আসছে না। হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগী কোনো চিকিৎসা পাচ্ছে না। কারণ তারা জনগণকে সুবিধা দেয়া, জনগণের কষ্ট লাঘব করার কোনো কাজ করেনি। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙে গেছে, একেবারে ভঙ্গুর।
রিজভী বলেন, সরকার মনে করে আমি যেটা বলব সেটাই আইন। কেউ কিছু বললে লাল ঘরে পাঠিয়ে দেবো। বিরোধী দল ও বিরোধী মতের জন্য একেবারে পারমানেন্ট করে রেখেছে লাল ঘর, ইটের লাল দেয়ালের মধ্যে বন্দি করে রাখব। আমরা বলতে চাই, আমাদের বন্দি করবেন তারপরেও আমরা প্রতিবাদ করবো। আমাদের মামলা দেবেন, আমাদের কারাগারে নিয়ে যাবেন- আমরা তো প্রস্তুত সব সময়। কিন্তু আপনার অন্যায়-অবিচার-অত্যাচার-জুলুম আর এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।
এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা কেজি সেলিম, ফয়সাল প্রধান, আহম্মেদ উল্লাহ, জুনায়েদ চৌধুরী, বাবু তানভীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলের প্রতিবাদে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করেন।