গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বড় আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান বিএনপির

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে দেশের সংকট কেবল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার না, বিএনপির না, তারেক রহমানের না, এই সংকট সব জনগণের। এমন পরিস্থিতিতে সুশৃঙ্খলভাবে আমাদের দলকে তৈরি করতে হবে। আরও বড় আন্দোলনের জন্য ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণকে সংগঠিত করে তাদেরকে নিয়ে মাঠে নামতে হবে।

গতকাল শুক্রবার বিকালে গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে গাজীপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর পর গাজীপুরে সমাবেশ করা গেছে। আপনারা যদি সত্যিই স্বাধীন থাকতে চান, আপনারা যদি গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চান, তবে আপনাদেরকে অবশ্যই শৃঙ্খলার সঙ্গে চলতে হবে।

তিনি বলেন, ইতিহাস কী বলে, সিরাজউদ্দৌলার হাজার হাজার সেনা ছিল। লর্ড ক্লাইভের মাত্র কয়েকশ’ সেনা সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করেছিল। ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খলজি মাত্র ১৭ জন অশ্বারোহী নিয়ে নদীয়ার রাজা লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বাংলা জয় করেন। অর্থাৎ আপনি যদি সুশৃঙ্খল বাহিনী না হোন, আপনাদের মধ্যে যদি শৃঙ্খলা না থাকে, শুধু আবেগ দিয়ে, স্লোগান দিয়ে যুদ্ধ জয় করা যাবে না। মোট কথা, শৃঙ্খলা এনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, কেউ কাউকে কিছু দিয়ে দেয়না, সবকিছু আদায় করে নিতে হয়। আমাদেরকে আমাদের হিস্যা আদায় করে নিতে হবে। আওয়ামী লীগ বা কোন ব্যক্তি এদেশের প্রভু নয়, মালিক নয়। এই দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। এই দেশের মালিক আপনারা। আপনাদের ট্যাক্সের টাকায় প্রশাসনের সবাই চলে। তাই বলতে চাই, প্রশাসনের যারা আছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা আছেন, আপনারা কখনও সংবিধান লঙ্ঘন করবেন না। সংবিধান আপনাদের কে দায়িত্ব দিয়েছে রাষ্ট্রকে, রাষ্ট্রের জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। কোন একটা ব্যক্তি বা কোন দলকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য নয়। জনগণ এখন পরিবর্তন চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। জনগণ তার সুচিকিৎসা চায়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। তিনি এই দেশের গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করেছেন, পথে-ঘাটে প্রান্তরে প্রান্তরে। তিনি উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। এখনো তিনি সংগ্রাম করছেন। এখনো এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের রোষানল থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য বন্দী হয়ে আছেন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সবাই দোয়া করবেন তিনি যেন সুস্থ হয়ে আমাদের মধ্যে ফিরে আসতে পারেন। আমরা যেন তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারি, মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারি এই হোক আমাদের আজকের শপথ। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, একটা উত্তাল গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই দানবীয় সরকারকে উৎখাত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি, এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।

আরো পড়ুন