প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যত অবদান

একজন গৃহবধূর পরিচিতি নিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করে রাষ্ট্র ও দল একাই সামলেছেন। রাজনীতির মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। বিএনপিকে পতনের খাদ থেকে টেনে তুলেছেন। ভাঙন রোধ করে একক ভাবমূর্তি দিয়ে নির্বাচনে জিতিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। খালেদা জিয়া একদল অভিজ্ঞ ও দক্ষ রাজনৈতিক নেতার সাহচর্য পেয়েছিলেন। এই নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রাজনীতিতে নিজস্ব ভাবমূর্তি গঠন করেছেন।
প্রথম মেয়াদে খালেদা জিয়া যখন দায়িত্ব নেন, তখন দেশের অর্থনীতি খুব নাজুক অবস্থায় ছিল। নাজুক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কাঠামোগত পরিবর্তন করে অর্থনৈতিক সংস্কারের সূচনা করা হয়। তাঁর প্রথম মেয়াদকে বলা হয় অর্থনৈতিক সংস্কারের শাসনামল। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে পণ্য আমদানিতে লাইসেন্স প্রথা বিলোপ করা হয় ওই সময়, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করেছিল।
খালেদা জিয়া প্রথম পর্যায়ে রাজনীতিবিদ ছিলেন না, কোনো রাজনৈতিক প্রশিক্ষণও ছিল না। রাজনীতিতে তাঁর আসার কথাও ছিল না। কিন্তু সময়ের বিশেষ পরিস্থিতিতে তিনি রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি তাঁর মেধা ও দক্ষতা অনুসারে রাষ্ট্র ও দল পরিচালনা করেছেন।
২৭ ধরনের শুল্ক হ্রাস করে ৭ ধরনের আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য মূল্য সংযোজন কর প্রবর্তন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করা করা হয়। তৃতীয় প্রজন্মের নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত আয়কর প্রদানের হার ৫৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ করা হয়। কাঁচামাল আমদানি সহজ করায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের নতুন পরিবেশ তৈরি হয়। ফলে রপ্তানি আয়ও বৃদ্ধি পায়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে জিডিপির ৮৯ শতাংশ আসে বেসরকারি খাত থেকে। এসব কারণে নানা ধরনের রাজনৈতিক সংঘাত, অনিশ্চয়তা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও ৯০–পরবর্তী সময়ে দেশে কখনোই খাদ্যসংকট সৃষ্টি হয়নি। দুর্ভিক্ষ হয়নি। অর্থনীতির উদারীকরণ ছাড়াও খালেদা জিয়ার আমলে নারীর ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষা ও শিক্ষা উপবৃত্তি শুরু করা হয়।
বৃহস্পতিবার, জুন ২৪, ২০২১, দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত মতামতে।
                                                                                                                                     মারুফ মল্লিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
You might also like