বাংলাদেশে ‘জঙ্গি কার্যক্রম’ চালাতো ভারতীয় নারী

রাজধানীতে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি’র নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। ওই নারীর নাম আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম (২৫)। ওই নারী জঙ্গি ভারতীয় ধর্মান্তরিত মুসলিম।

তার আগের নাম প্রজ্ঞা দেবনাথ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলা বাসিন্দা তিনি। ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে ওই নারী জঙ্গিকে গত শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে পুলিশ জানান, গ্রেপ্তাকৃত আয়েশা জান্নাত মোহনা ধর্মান্তরিত মুসলিম। আগে তার নাম ছিল প্রজ্ঞা দেবনাথ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায় তার বাড়ি। ওমানপ্রবাসী এক বাংলাদেশির সঙ্গে বিয়ের পর আয়েশা এ দেশে এসে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ওমান প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক আমির হোসেন সাদ্দামকে মুঠোফোনে বিয়ের পর বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আয়েশা গত বছরের অক্টোবরে চলে আসেন।

পুলিশ আরো জানান, কেরানীগঞ্জ ও নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার কয়েকটি মাদ্রাসায় পরিচয় গোপন করে শিক্ষকতা করছিলেন আয়েশা। নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী গ্রেপ্তার হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। তবে সাংগঠনিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, বিয়ের আগে থেকেই নব্য জেএমবির নারী শাখার সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ রাখতেন আয়শা। এক পর্যায়ে নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী খাতুনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়।

তিনি আরো বলেন, এই তরুণী একাধিকবার বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন। তার এই আসা-যাওয়ার কারণ কি ছিলো তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। সর্বশেষ গত অক্টোবরে স্বামী সাদ্দামের পরামর্শে তাসনিম বাংলাদেশে এসে আসমানীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন।

সিটিটিসির উপকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশে আসার পর সে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট তৈরি করে তা দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে। তা দিয়ে নব্য জেএমবির সদস্যদের সহায়তায় ঢাকার কেরানীগঞ্জে ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় চাকরি নেয়।’

তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট, বাংলাদেশের জাতীয় পরিচপত্র ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, ২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাসনিম অনলাইনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এরপর ধর্মান্তরিত হন। এরপর নব্য জেএমবির সদস্যরা তাকে দলে ভেড়ান।

জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানান, তিনি ২০১৬ সাল থেকে ভারত থেকে নিয়মিত বিরতিতে বাংলাদেশে আসা যাওয়া করেন। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বও পালন করেছেন।

সিটিটিসি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, আয়েশার কাছ থেকে তারা বেশকিছু কাগজপত্র পেয়েছেন। ওই কাগজপত্রগুলো যাচাই বাছাইয়ের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হয়েছে।

বাংলা/এনএস

আরো পড়ুন