বেলুন বিক্রেতাকে ঘিরে ধরাই কাল হলো পাঁচ শিশুর

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর সড়কে দুই-তিন দিন পরপরই গ্যাস বেলুন বিক্রি করতে আসতেন এক ব্যক্তি। আসা মাত্রই তাঁকে ঘিরে ধরত ফজর মাতবরের বস্তির শিশুরা। বরাবরের মতো আজও বেলুন বিক্রেতার গাড়িটিকে ঘিরে দাঁড়িয়েছিল শিশুরা। সেটিই কাল হলো তাদের। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মুহূর্তেই ঝরে গেছে পাঁচ শিশুর তাজা প্রাণ।

নিহত পাঁচ শিশু হলো: শাহিন (১০), নূপুর (৭), ফারজানা (৯), জান্নাত (১৪) ও রমজান (৮)। রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুমন প্রথম আলোকে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তাঁদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ভ্যানগাড়িতে করে ওই ব্যক্তি মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে গ্যাস বেলুন বিক্রি করতেন। আজ বুধবার বিকেলে রূপনগর ১১ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় ফজর মাতবরের বস্তির সামনে বেলুন বিক্রি করতে আসেন তিনি। তাঁকে দেখামাত্রই বস্তির শিশুরা তাঁকে ঘিরে ধরে। এ সময় সিলিন্ডারে পাউডার জাতীয় কিছু একটা ভরছিলেন ওই বেলুন বিক্রেতা। এর পরপরই হঠাৎ বিকট শব্দে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আশপাশে থাকা ১০-১২ জন প্রায় ১৫ ফুটের মতো ছিটকে পড়েন। বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থলে চার শিশুর ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া যায়। পেটে আঘাত পাওয়া আরেক শিশু দৌড়ে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরই সে লুটিয়ে পড়ে। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিস্ফোরণের স্থান থেকে কিছুটা দূরে আমি ঝালমুড়ি বিক্রি করি। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ওই বেলুন বিক্রেতা ভ্যান নিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালে আমি তাঁকে চলে যেতে বলি। এরপর একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে তিনি একটি টিনশেডের ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। কিছুক্ষণ পর বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই।’ বিস্ফোরণে বিকট শব্দ হলেও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।

আরো পড়ুন