মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ: রিজভী

মুক্তিযোদ্ধাকে শোকজ করায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মায়াকান্না করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদকে শোকজ করায় তিনি মায়াকান্না করছেন। অথচ তিনি ভুলে গেছেন তার দল আওয়াম লীগ মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী রাজনৈতিক দল। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনারা ৭২-৭৫ সালে ক্ষমতায় ছিলেন। সিরাজ শিকদার কি রাজাকার ছিল। আপনারা ক্ষমতায় থাকার সময় মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ শিকদারকে হত্যা করেছেন। আপনারা জাসদ সর্বহারা পার্টির অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হত্যা শুরুই করেছে এই আওয়ামী লীগ। তারা এখন বড় বড় কথা বলছেন।

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রাম শহরে বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

১/১১’র সময় মাইনাস টু ফর্মুলার কথা উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সেই সময় মাইনাস টু ফর্মুলার সাথে বাইরের কেউ কেউ যেমন জড়িত ছিলেন, তেমনি জেলের ভেতরে থেকেও কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তাদের কেউ কেউ এখন বড় বড় কথা বলে। তাদের মনের পীড়া নিবৃত্ত করার জন্য মাঝে মাঝে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে থাকেন।

ইভিএমকে জালিয়াতি পদ্ধতি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ইভিএমকে দূর থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে হ্যাক করার সুযোগ থাকে। এই পদ্ধতিতে কোথাও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। বিশ্বের উন্নত, সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশগুলো এসব পদ্ধতি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে ত্রæটির কারণে। কিন্তু বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক, অবৈধ সরকার বিনাভোটে জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ইভিএম পদ্ধতি চালু করেছে। কারণ তারা জানে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে, মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে ক্ষমতাসীন দলকে আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলবে। এজন্যই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দেয় না। সরকার দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান ভোট, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন সব ধ্বংস করেছে।

ইভিএম পদ্ধতির নেতিবাচক দিক নিয়ে রিজভী বলেন, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এতবড় নির্বাচন হয়ে গেল সেখানেও কিন্তু ইভিএম মেশিনের প্রচলন হয়নি। অন্যান্য দেশে যারা চালু করেছিল তারাও বন্ধ করেছে এবং জার্মানীতে কোর্টে এ ব্যাপারে একটি মামলা আছে।

নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী যারা থাকে তারা নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ করে। নানা ধরণের সুযোগ সুবিধা প্রশাসন থেকে দেয়া হয়। আর বিরোধীদলীয়, বিএনপি প্রার্থীদের হামলা, মামলা, গ্রেফতার, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, বাসা-বাড়িতে গিয়ে হুমকী প্রদর্শণ করা হয়। ভোটারদের পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রে না আসার জন্য হুমকী দেয়া হয়। এই হচ্ছে সারাদেশের নির্বাচনের চিত্র।

এদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কুড়িগ্রাম পৌরসভায় বিএনপি দলীয় প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বেবুর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীসহ ভোটারদের কাছে ধানের শীষের পক্ষে ভোট দেয়ার আহŸান জানান। প্রচারণা শেষে শহরের এনআর প্লাজা মার্কেটে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। এ সময় জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তার সাথে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচন।

 

You might also like