সাড়ে আট কিলোমিটার ব্লক বাঁধে বাংলাদেশের মানচিত্রে টিকে থাকবে সাগর কন্যা হাতিয়া!
সংগ্রাম ডেস্ক: আজও মনে পড়ে ২০০৯ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তমরদ্দির প্রোগ্রাম গুলোর কথা । সারাদিনে মনে হয় চারটা প্রোগ্রাম শেষ করে ফেরার পথে ফোন আসলো তমরদ্দি মাঠে জননেতা প্রকৌশলী ফজলুল আজিম সাহেব চলে এসেছেন । পড়ন্ত বিকেল, হাজার হাজার নারী পুরুষ তমরদ্দি স্কুল মাঠে জননেতা প্রকৌশলী ফজলুল আজিম এবং শামীমা আজিম মামী’র কাছে একটাই দাবি – আমরা ভোট দিবো কিন্তু আমাদের একটাই দাবি তমরদ্দি ব্লক বাঁধ চাই।
আমরা ব্যক্তি বিশেষ কিছু চাইনা।
জননেতা দুহাত তোলে কথা দিলেন –
ইনশাআল্লাহ আমি নির্বাচিত হলে আপনাদের এই দাবি পূরণ করবোই ,ওয়াদা করলাম।
শত শত নারী পুরুষ মিলে গফুর সওদাগর খালুজ্বীর রাইস মিলের মাঠে গিয়ে নদী দেখে আসলাম ।
তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেন এবং ওয়াদা রক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত করলেন।
কিন্তু কপাল খারাপ আগা গোড়া মেস হলোনা!
তবুও তিনি জাতীয় সংসদে বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুললেন তার দাবিগুলো নিয়ে।
পাসও হলো, যথারীতি কাজ ও শুরু করলেন।
একদিকে জাহাজমারা টু নলচিরা প্রধান সড়কের সংস্কার, অন্য দিকে ব্লকবাঁধ।
এদিকে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্যে এম্বুলেন্স, অন্য দিকে বিদ্যুৎ নিয়ে জোর তৎপরতা।
বিদ্যুৎ ও পাশ হলো বালুও মাঠ ও ভরাট হতে চললো।
মানুষের মনে উন্নয়নের ছোঁয়া , তমরদ্দিবাসী সহ হাতিয়ার সকল স্তরের মানুষের প্রসংশায় পঞ্চমুখ।
আমার মনে পড় ৮৬ তে তিনি যখন প্রথম এমপি হন তখন বাতানখালী নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
তিনি নেদারল্যান্ড থেকে নদী রক্ষা বাঁধ এর জন্যে প্রকৌশলী এনে ছিলেন।
সারা দিন নদীতে ওদেরকে নিয়ে গবেষণা করলো।
তখন নদীর গভীরতা ছিলো প্রায় বার তের ফুট, ব্লক বাঁধ দিলে বিলীন হয়ে যাবে।
প্রবীণ রাজনীতিবিদরা পুরোটা বলতে পারবেন ।
আমি যতটুকু জানি একজন এমপি মহোদয়ের কাজ হলো এগুলো।
তিনি তাই করেছিলেন।
কিন্তু তমরদ্দির ব্লকের কাজ শেষে না হতেই সরকার পরিবর্তন হলো।
তখন ব্লক বাঁধ তিনের দুই অংশের কাজ প্রায় শেষ তবুও একবার আমাদের সামনে বসে ফোন করেছিলেন ঠিকাদারকে এবং সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন।
তারপর পাউবোর নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোন করে বললেন কাজের অগ্রগতি নিয়ে।
তিনি পুরো কাজটা নিজ তত্ত্বাবধানে করেছিলেন।
৫ জানুয়ারি তিনি আর নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেননি পরিবর্তন হয়ে গেলো আমাদের আলোক উজ্জল ভাগ্য।
দুই মাস পরে শুনি ঠিকাদার বাকি কাজ রেখে চলে গেছে যা কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে যুগ থেকে যুগান্তর।
কেটে গেলো আরো পাঁচটি বছর বিলীন হয়ে গেলো মাইলের পর মাইল ।এত বছর পর আগা গোড়া এক কিন্তু নেই কোন অটো বরাদ্দের , সংস্কার কাজ গুলো, যেমন বেড়ীবাঁধ, রাস্তা মেরামত, পুল মেরামত ইত্যাদি।
স্পেশাল বরাদ্দ নিয়েছে শুনেছি।
বিদ্যুৎ তাও চলে গেলো পাশের দ্বীপ মনপুরা চরফ্যাশন।
গত বছর নিবার্চনের পর পর সরকারের মন্ত্রী গিয়ে জোরালো ভাবে বলে আসলো ১৫ তারিখ থেকে জিও ব্যাগ ফেলে ডাম্পিং করা হবে। ডাম্পিং করার পর যদি জিও ব্যাগ বসে যায় তাহলে ব্লকবাঁধ দ্রুত শুরু হবে।
তখন ৫০ হাজার ব্যাগের অভিনন্দনে সোস্যাল মিডিয়া ভাসিয়ে দিয়ে ছিলো।
কাজ শুরু হলো ঠিক, কিন্তু ৪০০০ হাজার বস্তা।
সেই বস্তা গুলো আজও বসে আছে , বেঈমানী করেনি।
কিন্ত দুই পাশ তলিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
নদী ও চাই বস্তা পড়ুক সে ফিরে যাবে। আর কত , ১৯৬০ সাল থেকে ভেঙে যাচ্ছে।
হাতিয়ার ঐতিহ্যবাহী স্কুল ১৯৭৮ সালে স্হাপিত , বর্তমানে ৮০০ ছাত্রছাত্রী, প্রাইমারী স্কুলে প্রায় ২০০ ছাত্র ছাত্রী, নূরানী হেফজখানায় প্রায় একশত ও বেশি কোরআনে হাফেজী পড়তেছে। আফাজিয়া বাজারে দুইশতের অধিক দোকানপাট ঐতিহ্যবাহী আফাজিয়া মসজিদ।
মসজিদের পাশে শুয়ে সেই মহান দানশীল মরহুম আলহাজ্ব আজহার উদ্দীন মিয়া এবং তাঁহার ষষ্ঠ ছেলে আলাউদ্দিন খিলজী এবং আমার দুই ভাই বোন।
আমরা হাতিয়াবাসী মেঘনার এই করালগ্রাস থেকে রক্ষা পেতে চাই।
পাউবোর নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারের একটু আন্তরিকতায়
রক্ষা পাবে এই সব স্হাপনা গুলো সহ আবাদি জমি, বসত ভিটে, না হয় সব বিলীন হয়ে যাবে অচিরেই। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে কত ব্যাগ বরাদ্দ দিয়েছিলো ?প্রতিব্যাগ কতকেজি বালু দেওয়ার কথা বস্তা প্রতি কত টাকা বরাদ্দ এবং কত কোটি টাকার কাজ কাজের অগ্রগতি ইত্যাদি পরিদর্শন করে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার বিনীত অনুরোধ করছি।