টক অব দ্য টাউন এখন কানাডার বেগমপাড়া

কানাডার বেগমপাড়া এখন শুধু কানাডাই নয়, সারা বিশ্বে আলোচিত খবর। গত দুই দিন বাংলাদেশের মিডিয়ায় এটি ছিল প্রধান শিরোনামে। এ খবরে কানাডা প্রবাসী বাঙালিদের মাঝে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কানাডায় সারাদিনই খবরটি ছিল টক অব দ্য টাউন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথমদিকে ঢাকার পত্রপত্রিকায় দুর্নীতি এবং ব্যাংকিং খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কতিপয় লুটেরার কানাডায় বসতি স্থাপনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেন।

“রুখো লুটেরা বাঁচাও স্বদেশ’ শীর্ষক আন্দোলনে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারকারী লুটেরাদের শাস্তির দাবিতে বাংলা, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে বাংলাদেশি সাধারণ নাগরিকদের উদ্যোগে বছরের শুরুতে কানাডার টরেন্টো ও মন্ট্রিয়লে প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

টরোন্টোর প্রবাসী বাঙালি লিটন মাসুদ জানান, দুর্নীতিবাজ লুটেরা, অর্থপাচারকারী এদের কোনো দল নেই। এরা দেশ ও জাতির শত্রু। কানাডায় বসবাসরত দুর্নীতিবাজদের এবং তাদের পাচারকৃত অর্থ বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

টরোন্টো প্রবাসী বাঙালি খালেদ শামীম জানান, অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ এবং কানাডা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। জন্মভূমি হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি এবং আবাসভূমি হিসেবে কানাডার প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। লুটেরাদের প্রতি আমাদের পরিষ্কার বার্তা- কানাডাকে বাংলাদেশের টাকা পাচারকারী লুটেরাদের অভয়ারণ্য হতে দেয়া হবে না।

দ্য ফিন্যান্সিয়াল ট্রানজেকশনস অ্যান্ড রিপোর্ট অ্যানালাইসিস সেন্টার অব কানাডা (ফিনট্র্যাক) সম্প্রতি গত এক বছরে ১৫৮২ মুদ্রা পাচারের ঘটনা চিহ্নিত করেছে। ইতোমধ্যে সংস্থাটি সারা দেশ থেকে খুঁজে বের করা মুদ্রা পাচারকারীদের বিস্তারিত তথ্য কানাডিয়ান সিকিউরিটিজ ইনটেলিজেন্স সার্ভিস এবং আরসিএমপির কাছে হস্তান্তর করেছে।

জানা গেছে, ব্যাংক, ইন্সুরেন্স কোম্পানি, শেয়ারবাজারের ব্রোকার, রিয়েল এস্টেট ব্রোকারেজ এবং ক্যাসিনো থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ফেডারেল এ সংস্থাটি অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে মুদ্রা পাচারের ঘটনা উদঘাটন করে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, কোভিডের মধ্যেও বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে কানাডায় আসছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে ফিনট্র্যাক বাড়তি তদন্ত শুরু করে। রিয়েল এস্টেট ব্রোকারেজগুলোয় গোয়েন্দাদের বাড়তি নজর রয়েছে বলে জানা যায়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এমন সময় বাংলাদেশ থেকে কানাডায় অর্থপাচারকারী ২৮ জনের তথ্য থাকার কথা জানালেন, যখন কানাডার ফেডারেল সংস্থা ১৫৮২টি মুদ্রা পাচারের তথ্য দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করেছে।

বাংলাদেশের মন্ত্রীর কাছে থাকা ২৮ জনের তথ্য আর কানাডার ফিনট্র্যাকের তথ্যের মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, কানাডার বহুল আলোচিত বেগমপাড়ায় আমলাদের বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে সাবেক এবং বর্তমান উচ্চপদে রয়েছেন এমন আমলাদের খবর পাওয়া গেছে।সূত্র: যুগান্তর

 

You might also like