আওয়ামী লীগ নামক সরকারের মেশিন একবার যদি রাস্তার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। এই মিশিন কোথায় চলে যাবে, কত টুকরা হবে, কত হাতে হাতে চলে যাবে এটার নিশ্চয়তা বাংলাদেশের কেউ দিতে পারবেনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
তিনি বলেন, মেশিনের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে গড়বড় হয়ে গেছে। সুতরাং এই মিশিন বিকেল হতে বাধ্য। এই মেশিন বিকল হবেই। এই মেশিন রাস্তার মাঝখানে বন্ধ হবেই।
বুধবার ২৭ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বর্তমান সরকার অনাচার, অনিয়ম, অত্যাচার এর মধ্য দিয়ে দেশটাকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে এর ফল আসবেই এর কোনো সন্দেহ নেই।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, প্রকৃতির নিয়মেই গাছের ফল পাকে। কিন্তু ফল বোঁটা থেকে পড়ে না। ফল পরে যখন বেশি পেকে যায়। বোটা যখন ফলের ওজন ধরে রাখতে পারে না তখন। কিন্তু ফল পাকার সঙ্গে সঙ্গে যদি টুকা দেওয়া হয় তাহলে কিন্তু দুদিন আগেই পড়ে। প্রকৃতির নিয়মের অপেক্ষায় থাকে না। এখন বিএনপির কাজ, জাতীয়তাবাদী শক্তির কাজ একটাই। সেই কাজের নেতৃত্বে থাকতে হবে মুক্তিযোদ্ধা দলকে। মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কে। ফল পাকা হয়ে গেছে।
বর্তমানে আওয়ামী লীগ মারার জন্য কাউকে খুঁজে পাচ্ছে না। তাই নিজেরা নিজেরা মারামারি করছেন যোগ করেন তিনি।
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন,চিটাগাংগে নির্বাচন হচ্ছে আজকে। আমরা সারা জীবন যেটা দেখেছি আন্তর্জাতিক এর কথা বাদই দিলাম। বাংলাদেশ সারা জীবন যেটা দেখেছি যখন ঘূর্ণিঝড় আসে, সাইক্লোন আসছে, রেড কিসেন্ট এর টিম তারা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে লোক নিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ ১০ নম্বর ৮ নম্বর সংকেত, দুর্যোগের সময় রেড ক্রিসেন্ট টিম উপস্থিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ভোট তো দুর্যোগ নয়। বাংলাদেশের ভোট নাকি উৎসব? চট্টগ্রামের ভোটকেন্দ্রে রেড ক্রিসেন্ট ১০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে অ্যাম্বুলেন্স সহকারে। সেখানে যদি কিছু হয় সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে উদ্ধার ও চিকিৎসা ব্যবস্থা করার জন্য।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, পাকিস্তান আমলেও কখনো দেখি নাই, শুনে নাই যে নির্বাচনের সময় রেড ক্রিসেন্ট এর স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয় এই প্রথম দেখলাম। তার অর্থ কি? তারমানে সরকার জানে সেখানে খুনাখুনি হবে। তিনজন এখন পর্যন্ত মারা গেছে চট্টগ্রামে। একজন আওয়ামী লীগের, একজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থক আর একজনের মৃত্যু সংবাদ শুনে তার মা মারা গেছে। যে আশঙ্কা রেড ক্রিসেন্ট করেছিল সেটাই কিন্তু ঘটেছে।
তিনি বলেন, অদ্ভুত ভাবে দেশটা চলছে এভাবে কখনো চলে নাই। শেখ মুজিবর এর আমলে অনেক অনাচার, দুর্নীতি ছিল কিন্তু এইভাবে কখনো চলে নাই।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনি দেখেন সারা বাংলাদেশকে কেপে ছিল মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ডে। সিনহার হত্যাকাণ্ডের পরে পুলিশ মামলা করল। মেজর সিনহার বোন ও মামলা করল। র্যাব তদন্ত করল। তদন্ত করে পুলিশের মামলাকে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিল। পুলিশ আবার সেটা চ্যালেঞ্জ করে কোর্টে নারাজি দিয়ে দিল। এখন বিচার ঝুলে আছে।
তিনি বলেন, এখন সব জায়গায় তাদের নিজেদের মধ্যে লেগেছে। এক এসপি ভোটকেন্দ্রে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে অপমান করে। সেই এসপিকে গতকাল হাই কোর্ট থেকে বলা হয়েছে….। অর্থাৎ মেশিনের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তে গড়বড় হয়ে গেছে। সুতরাং এই মিশিন বিকেল হতে বাধ্য। এই মেশিন বিকল হবেই। এই মিশিন রাস্তার মাঝখানে বন্ধ হবেই। এবং একবার যদি এই আওয়ামী লীগ নামক সরকারের মেশিন রাস্তার মধ্যে বন্ধ হয়ে থেমে যায়। এই মিশিন কোথায় চলে যাবে, কত টুকরা হবে, কত হাতে হাতে চলে যাবে এটার নিশ্চয়তা বাংলাদেশের কেউ দিতে পারবেনা।
আওয়ামী লীগের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অনাচার, অত্যাচার, ভস্টাচার সবকিছু মিলে হচ্ছে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার। এর বাইরে কোন সংজ্ঞা আমি এদেরকে দিতে পারছিনা।
তিনি আরও বলেন, এদের আওয়ামী লীগের মত সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বানানোর অদ্ভুত কিসিমের রাজনৈতিক দল আমি কখনো দেখিনি নাই। তাই বন্ধুরা এই লড়াইটা অনেক কঠিন লড়াই। লড়াইয়ের জাতীয় যে উদ্যোগ সেই উদ্যোগটা ইতিমধ্যে বিএনপি তত্ত্বাবধানে নেয়া হয়েছে। এই লড়াইয়ে অনেক নতুন নতুন শক্তি এখানে দেখতে পাবেন। সেই সম্মিলিত শক্তির ঐক্য বদ্ধ প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর অবসরপ্রাপ্ত সৈয়দ ইব্রাহিম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।