দুই ডলার ৩৩ সেন্টের ভ্যাকসিন চার ডলার দিয়ে কিনে সরকার দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা আলমগীর । তিনি বলেন, ‘‘এতো বড় একটা করোনা মহামারী আমাদেরকে আক্রমণ করেছে, সারা বিশ্ব আক্রমণ করেছে এটাকে মোকাবিলা করার জন্য তাদের ভুমিকাটা দেখেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে শুধু তারা দুর্নীতি করবার জন্য কাজগুলো করেছে। এমনভাবে শুরু হয়েছে যে, এটা এখন ভঙ্গুর অবস্থায়।”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে ‘স্বাস্থ্য খাত ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক প্রামাণ্য চিত্রের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘এখন ভ্যাকসিন নিয়ে শুরু হয়েছে। এই ভ্যাকসিনেও কিভাবে দুর্নীতি হচ্ছে। দুই ডলার ৩৩ সেন্ট দিয়ে কেনা ভ্যাকসিন – এরা (সরকার) চার ডলার দিয়ে কিনছে। সেখানে মধ্যস্বত্ত্বভোগী তাদের নিজস্ব একজন সুবিধাভোগীকে তারা সেই দায়িত্ব অর্পন করেছে।”
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের হাতে স্বাস্থ্যখাত ধব্ংস হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ কোনো স্বাস্থ্য সেবা পায় না। এখানে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাধারণ মানুষ যাদের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া সেটা তারা পাচ্ছে না।”
তিনি আরো বলেন,‘‘প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখবেন এখানে একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে দুর্নীতি। যার ফলে কি করে জনগনের পকেট থেকে টাকা বের করে নিয়ে এসে তাদের পকেটে ভরবে। যার ফলে কি হয়েছে? দুই শ্রেণী হয়েছে। একটা গরীব শ্রেণী আরেকটা বিত্তশ্রেণী। বড় লোক শুধু বড়ই হয়েছে আর গরীবেরা শুধু গরীবই হয়ে্ছে।”
এ সময় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার যে সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পালন করতে যাচ্ছি, সেই জয়ন্তীতে আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে সবচেয়ে বড় ফোকাস পয়েন্টে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো এবং তার অবদানসমূহ নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছিয়ে দিতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, ‘‘এই সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে শহীদ জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করছে, ইতিহাসকে বিকৃত করছে।”
এ সময় সাতক্ষীরার সাবেক সাংসদ দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘‘সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে বিনষ্ট করতে চায়, সমস্ত গণতন্ত্রের যারা নেতাকর্মী তাদেরকে ধবংস করতে চায়। তারই ফলোশ্রুতিতে আজকে আমাদের বিরুদ্ধে এক লক্ষ মামলা, ৩৫ লক্ষ আসামী। সেই পুরনো মামলা নিয়ে আসছে।”
‘‘গত পরশু সাতক্ষীরায় ২০০২ সালে একটি মামলায় আমাদের দলের সম্পাদক সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ প্রায় ৩৪জনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি ওই পুরনো মামলার রায় হবে। সম্ভবত সেই মামলায় তাদেরকে সাজা দেয়া হবে। এটা হচ্ছে সরকারের অপকৌশল যে, এভাবে জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা এই গ্রেপ্তারের নিন্দা ও তাদের মুক্তি দাবি করছি।”
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও ডা. মাহমুদুর রহমান নোমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বি্শেষজ্ঞ চিকিতসক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে চিকিতসকদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম সেলিম, মোফাক্কারুল ইসলাম রানা, আবদুস শাকুর খান, আজহারুল ইসলাম. জাহিদুল কবির, ফেরদৌস আহমেদ, নিলুফার ইয়াসমীন, জাহানারা বেগমসহ বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিতসকরা উপস্থিত ছিলেন।